রংপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর নামে কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘটনায় আসামি টিটু রায়কে ১০ বছরের ক...
রংপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর নামে কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘটনায় আসামি টিটু রায়কে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ওই আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক ড. আবদুল মজিদ এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত টিটু রায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামি টিটু রায়ের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার স্ট্যাটাস দিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। তার স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে রংপুরের শলেয়াশাহ ঠাঁকুরপাড়া এলাকায় হিন্দু বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় অবস্থান করে রংপুরের গঙ্গচড়া উপজেলার হরকলি ঠাঁকুরপাড়ার মৃত খগেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে টিটু রায় ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর এমডি টিটু নামে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে মহানবী হজরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর ওই বছরের ১০ নভেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজের পর টিটু রায়ের শাস্তির দাবিতে স্থানীয় শলেয়াশাহ বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন স্থানীয় জনতা। পরে কয়েক হাজার মানুষ টিটু রায়ের বাড়িসহ ঠাঁকুরপাড়ার হিন্দুপল্লীর বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেন।
এ নিয়ে স্থানীয় মুসল্লি ও গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন পুলিশসহ ১৫ জন। এ ঘটনায় সদর ও গঙ্গাচড়া থানায় দুটি মামলা হয়। গঙ্গাচড়া থানার মামলায় ২২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মকবুল হোসেন।
এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে পিপি রুহুল আমিন তালুকদার জানান, কোনোভাবেই ধর্ম অবমাননা সমীচীন নয়। এটা আইন পরিপন্থি; যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি তৈরি করে প্রচার করায় আসামি টিুট রায়কে ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, সাইবার ট্রাইব্যুনালে ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতে রায় প্রদান করা হয়ে থাকে। সেই মোতাবেক ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে টিটু রায়ের মোবাইল ডিভাইস থেকে ওই ধরনের বিতর্কিত পোস্ট দেয়ার প্রমাণ মেলেনি। আমরা মনে করি নিরক্ষর একটি ছেলের পক্ষে ফেক আইডি খুলে এই রকম পোস্ট প্রচার করা সম্ভব নয়। বিচারক রায় দিয়েছেন। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।
No comments
আপনার কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!