গত ২২ এপ্রিল শনিবার সকালে রংপুর-কাউনিয়া উপজেলার গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গামন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর অবস্থায় দেখতে পান কয়েকজন পূজারী।
পরে কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা সড়ক সেতু এলাকা থেকে প্রতিমা ভাংচুরের অভিযোগে জাকির হোসেনকে (২১) আটক করে পুলিশ। ২৩ এপ্রিল রোববার তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রংপুর আদালতে পাঠায় পুলিশ।
জাকির হোসেন কুড়িগ্রাম সদরের রায়পুর গ্রামের নজরুলের ছেলে।
পুলিশ জানায়-
উপজেলার গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গামন্দিরে শনিবার সকালে কয়েকজন নারী পূজা করতে গিয়ে কালী প্রতিমা ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। জানাজানি হলে মন্দির কমিটির লোকজন ঘটনাটি প্রশাসন ও পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং অভিযান চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত জাকির হোসেনকে তিস্তা সড়ক সেতু এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
পরে খবর পেয়ে গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিয়া সুলতানা, কামরুজ্জামান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনেয়ারুল ইসলাম মায়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনোনীতা দাস। এ ছাড়া র্যাব, এনএসআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গামন্দির কমিটির সম্পাদক বিপ্লব গোস্বামী বলেন-
শুক্রবার রাতে পূজা-অর্চনা শেষে পুরোহিত মন্দিরের গেটে তালা লাগিয়ে চলে যান। শনিবার সকালে স্থানীয় সূর্যী রানী ও বাসন্তী রানী মন্দিরে পূজা দিতে এসে দেখেন মন্দিরের কালী প্রতিমা ভাঙা। পাশের ঘরে থাকা হনুমানের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি জানার পর পুলিশকে জানাই।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন-
এ ঘটনায় মন্দির কমিটির সভাপতি বাদী হয়ে মামলা করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাব, এনএসআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত জাকির প্রতিমা ভাঙার কথা স্বীকার করেছেন।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. ফেরদৌস আলী চৌধুরী বলেন-
‘আমরা ঘটনা জানার সঙ্গেই ঘটনাস্থল যাই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত শনাক্ত করে একজনকে আটক করা হয়। আরও কেউ জড়িত আছে কি না, সেটা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।’
রংপুর জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন-
এরই মধ্যে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করছে কাউনিয়া থানা-পুলিশ। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে কেউ এই কাজ করছে কি না, তা-ও পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এ ধরনের ঘটনার আর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাই।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন-
গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গা মন্দিরে নতুন করে প্রতিমা স্থাপনের জন্য সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে।