সাতক্ষীরা শহরের ঐতিহ্যবাহী শ্রীশ্রী রাধাশ্যামসুন্দর (ইসকন) মন্দিরের জায়গা দখল করে প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবৈধ প্রাচীর নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকার প্রভাবশালী পুরাতন সাতক্ষীরা কর্মকার পাড়ার মৃত শেখ রহমতুল্লাহ’র ছেলে শেখ ফজলে আলম ওরফে তোতা মাষ্টার মন্দিরের নামে রেকডিয় সম্পত্তি ৮ শতাংশের মধ্যে প্রায় ৩ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ ২.৫ শতাংশ সম্পত্তি অবৈধ দখল করে পাকা প্রাচীর নির্মাণ করে তার আয়ত্বে রেখেছে। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মন্দিরের জায়গা অবমুক্ত করার জন্য তাকে বারবার অনুরোধ করা হলেও প্রাচীর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করছেন।এতে পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ইসকন মন্দিরের জায়গায় প্রাচীর নির্মাণ করায় সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা মন্দির সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বিকাশ দাশ বলেন- তোতা মাস্টার সম্পূর্ণ অবৈধভাবে মন্দিরের জায়গায় প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। আমরা বাংলাদেশে হিন্দু মুসলমান একে অপরের সাথে অত্যন্ত সম্প্রতির সাথে বসবাস করে আসছি। আমরা চাই না এই সামান্য বিষয় নিয়ে আমাদের সম্প্রতি নষ্ট হোক। অনতিবিলম্বে মন্দিরের জায়গা থেকে প্রাচীর ভেঙে না নিলে আমরা আইনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। জেলা জয় মহাপ্রভু সেবক যুব সংঘের সভাপতি মিলন বিশ্বাস বলেন- দীর্ঘদিনের পুরাতন এই মন্দিরটি সাতক্ষীরা জেলার ঐতিহ্যবহন করে। দেশ- বিদেশের হাজার হাজার ভক্তরা এই মন্দির পরিক্রমা করতে আসেন। তাছাড়া দুর্গাপূজা, কালীপূজা, চিড়া দধি মহোৎসব, শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী, শীবরাত্রি, ব্যাসপূজা, সাপ্তাহিক নামহট্ট সহ নানান অনুষ্ঠানে হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হয়। মন্দিরের জায়গা সংকলন থাকায় এসব উৎসবে আমাদের ভক্তদের বিভিন্ন অসুবিধা হয়ে। তার উপরে মন্দিরের রেকডিয় সম্পত্তির দখল করে প্রাচীর নির্মাণ করা অত্যন্ত দু:খজনক ব্যাপার। আমরা জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে অতি দ্রুত মন্দিরের সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে আমাদের সহযোগিতা করেন। শ্রীশ্রী রাধাশ্যামসুন্দর (ইসকন) মন্দিরের সভাপতি পরমপুরুষ কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন- মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মন্দিরের জায়গা অবমুক্ত করার জন্য শেখ ফজলে আলম ওরফে তোতা মাষ্টারকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এ ব্যাপারে বসাবসি বা কোন আলোচনায় আসতে রাজি হননি। শ্যাম সুন্দর মন্দির একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মন্দির। এখানে সনাতন ধর্মীয় নানা রকম অনুষ্ঠান নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়। অবৈধ দখলজণিত কারণে মন্দিরের জায়গা স্বল্পতার জন্য মন্দিরে আগত ভক্তবৃন্দের যথাযথভাবে পূজা অর্চনা করা, প্রসাদ ব্যবস্থা করা বর্তমান অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এসময় তিনি মন্দিরের অবৈধভাবে দখলকৃত জায়গা উদ্ধার ও মন্দিরের সার্বিক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করার জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সাতক্ষীরা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিল সৈয়দ মাহমুদ পাপা বলেন- মন্দির কতৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি ঘটনাস্থলে পৌরসভার সার্ভেয়ারকে সাথে নিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে মাপ দিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। রাধাশ্যামসুন্দর (ইসকন) মন্দিরের অনেক জায়গা দখল করে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে, আমি শেখ ফজলে আলম ওরফে তোতা মাষ্টারকে অনুরোধ করেছি মন্দিরের যায়গা থেকে প্রাচীর ভেঙে ফেলার জন্য, কিন্তু তিনি আমাদের কথা শোনেননি। এবিষয়ে পৌরসভার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাতক্ষীরা পৌর সভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান বলেন- আমি অভিযোগ পেয়েছি সাথে সাথে ২নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল ও সার্ভিয়ারকে নির্দেশনা দিয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবিষয়ে শেখ ফজলে আলম তোতা মাস্টারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ও যোগাযোগ করা যায়নি।