Page Nav

HIDE
ads banner

Breaking News:

latest

Top Ads

শতবর্ষী শ্মশানঘাট স্কেভেটর দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে আব্দুর রশীদ

  যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পল্লীতে প্রকাশ্যে দিবালকে শ্মশান ঘাট স্কেভেটর দিয়ে ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত ১ মে সকালে স্থানীয় রজব আলীর ছেলে আব্...

 


যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পল্লীতে প্রকাশ্যে দিবালকে শ্মশান ঘাট স্কেভেটর দিয়ে ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত ১ মে সকালে স্থানীয় রজব আলীর ছেলে আব্দুর রশীদ নিজেদের রেকার্ডকৃত সম্পত্তি দাবি করে জোরপূর্বক শত বছরের পুরানো শ্মশানটি স্কেভেটর দিয়ে ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে।


জানা যায়- মনিরামপুর উপজেলার মশ্মিমনগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীকান্তপুর শতাধিক হিন্দু সম্প্রদায় পরিবার বসবাস করেন। ওই সকল পরিবারের লোকজন মারা গেলে লক্ষ্মীকান্তপুর শ্মশানে নিয়ে অন্ত্যেষ্টিয়াক্রিয়া বা মৃত দেহ সৎকার ও দাহ করা হয়। সেই শত বছরের পুরানো শ্মশানের ঘাট ও চিতা একই গ্রামের রজব আলীর ছেলে আব্দুর রশীদ স্কেভেটর দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।



সরজমিনে যেয়ে ওই গ্রামের নিরঞ্জন হালদার, শ্রীপদ হালদার, শুকলাল হালদার ও দিপংকর হালদারের সাথে কথা বলে জানা যায়- গত ১ মে সকালে তাদের চোখের সামনে গুড়িয়ে দেওয়া হয় শতবর্ষী শ্মশানটি। সেই সাথে গুড়িয়ে দেয়া হয় মৃত উর্মিলা বালা ও মৃত ডাক্তার নিরাপদ হালদারসহ অসংখ্য নারী ও পুরুষের সমাধিও। পাশাপাশি স্কেভেটর দিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হয় শ্মশানের ঘাট এবং চিতা। বর্তমানে শ্মশানের জায়গায় বড় বড় বেশ কয়েকটি পুকুর কেটে শতবর্ষী শ্মশানটি মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। এখন শ্মশানের স্থানে পুকুর খননের বালি আর বালি ছাড়া কিছুই নেই। সেখানে যে আদৌ শ্মশান ছিল এটা এখন আর বোঝার কোন উপায় নেই বলে জানান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন।


কথা হয় শ্মশান কমিটির সভাপতি সাধন কুমার ও রাজগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য রতন কুমারের সাথে তারা বলেন- গত ১ মে দুপুরে দেখতে পান যে তাদের দীর্ঘদিনের পুরানো শ্মশানটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। পরে তারা জানতে পারেন আব্দুর রশীদ নিজের সম্পত্তি দাবি করে এটি ভেঙ্গে দিয়েছে। অথচ একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা ২০শতক সরকারি খাস জমিতে শ্মশানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।


এতে করে তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে মারাত্মকভাবে আঘাত লেগেছে। তারা শ্মশান ঘাট ও চিতা ভাঙ্গা নিয়ে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন বলেও জানান। এটা লক্ষ্মীকান্তপুর গ্রামবাসীর জন্য মর্মান্তিক ঘটনা। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ও মনিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পূজা কমিটির এ দুই নেতা।




এব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুর রশীদ বলেন- ওই সম্পত্তি তাদের রেকার্ডকৃত পৈত্রিক সম্পত্তি। এছাড়া ও শ্মশানের সাথে তার একটি মৎস্য ঘেরও রয়েছে। সম্প্রতি শ্মশান কমিটির সাথে তার চুক্তি হয় যে ঘের কেটে শ্মশানে মাটি ভরাট করতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী আব্দুর রশীদ স্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে শ্মশান ভরাট করেন। এজন্য সে শ্মশান কমিটির কাছে ১৫হাজার টাকা দাবিও করেন। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে সে এমনটা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।


এব্যাপারে মশ্মিমনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম.এ গফুর জানান- তার গ্রামের বাড়ির পাশেই শ্মশানটি হওয়ায় তিনি কয়েকদফা মাটি ভরাটসহ বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে শ্মশাটিকে আরো দৃষ্টি নন্দন করে দিয়েছেন। শ্মশান ভাঙ্গার কথা শুনে খুবই মর্মাহত হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ৬ মে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও করেছেন।


এ ব্যাপারে মশ্মিমনগর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান- ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। যারাই ঘটনার সাথে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এ জনপ্রতিনিধি।


No comments

আপনার কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!

Latest Articles