Page Nav

HIDE

Breaking News:

latest

Top Ads

পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে একের পর এক হত্যাকাণ্ড চলছে।

  CHT News থেকে তথ্য গুলো নেওয়া হয়েছে। গত ১লা এপ্রিল শনিবার বিকেলে বান্দরবান-নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের তুমব্রু এলাকা...

 

CHT News থেকে তথ্য গুলো নেওয়া হয়েছে।
গত ১লা এপ্রিল শনিবার বিকেলে বান্দরবান-নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের তুমব্রু এলাকার বাইশপাড়িতে বিজিবি সদস্যরা তঞ্চঙ্গ্যা গ্রামবাসীদের উপর হামলা চালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন তঞ্চঙ্গ্যা নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়-

১লা এপ্রিল শনিবার বিকাল ৪টার দিকে বাইশপাড়ি গ্রামের তিন তঞ্চঙ্গ্যা নারী নিজেদের ঘরের গরু নিয়ে যাওয়ার পথে তমপ্রু এলাকা বাইশপাড়ি বিজিবি ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা ওই তিন নারীকে আটকায় এবং মায়ানমার থেকে গরু পাচারের অভিযোগ করে তাদেরকে বাইশপাড়ি বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এর মধ্যে ২ জনকে ক্যাম্পের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে একজনকে ক্যাম্পের ভেতর নিয়ে মারধর করে আহত করে।
পরে এ খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন উক্ত ঘটনার প্রতিবাদ করতে যায়। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিজিবি সদস্যরা বাইশপাড়ি গ্রামে গিয়ে অতর্কিতভাবে তঞ্চঙ্গ্যাদের ঘরবাড়িতে হানা দেয় এবং গ্রামবাসীদের ওপর হামলা চালায়। এতে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিজিবি সদস্যদের হামলায় বেশ কয়েকজন তঞ্চঙ্গ্যা নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে আহতদের নাম জানা যায়নি। আহতরা বর্তমানে উখিয়া উপজেলা জাদিমুড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত ২ এপ্রিল মানিকছড়ির যোগ্যছোলা ইউনিয়নে সাংগঠনিক কাজে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা মো. জামাল পাটোয়ারীর নেতৃত্বে একদল সেটলার বাঙালি ইউপিডিএফ সদস্য হ্লাচিং মং মারমাকে ধরে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে হত্যা করে।
গত ২ এপ্রিল রবিবার বিকালে খাগড়াছড়ি-মানিকছড়িতে ইউপিডিএফ সদস্য হ্লাচিংমং মারমাকে আটক করা হয়।
হ্লাচিংমং মারমা (২৩) হলো-
রামগড় সদর ইউনিয়নের বৈদ্য পাড়া গ্রামের মৃত থৈহ্লা প্রু মারমার ছেলে।
জানা যায়-
রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টার সময় হ্লাচিংমং মারমা কালাপানি এলাকায় সাংগঠনিক কাজে গেলে সেটলার বাঙালিরা তাকে ধরে বেধড়ক মারধর করে আহত করে। পরে তারা তাকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এরপর পুলিশের হেফাজতে তাকে মানিকছড়ি উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে রেফার করেন বলে জানা গেছে।
গত ৪ এপ্রিল দীঘিনালায় সেনা মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীরা ইউপিডিএফ সদস্য ত্রিদিব চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে।
গত ৬ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ-সংস্কারপন্থীদের একটি সশস্ত্র দল রুমার জারভারাং পাড়া থেকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রসহ ২২ জনকে অপহরণ করে সীমান্তবর্তী রোয়াংছড়ির খামতাং পাড়া স্কুলে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে ২২ জনকে ছেড়ে দেয়া হলেও পরদিন ৭ এপ্রিল সকালে ‘দু পক্ষের গোলাগুলি’র নাটক সাজিয়ে বাকীদের নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে। উক্ত ঘটনায় পুলিশ ৮ জনের লাশ উদ্ধারের কথা জানায়।
গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার সময় বান্দরবান-রুমা উপজেলার ১নং পাইন্দু ইউনিয়নের জুরভারং পাড়া থেকে সেনা মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ ও সংস্কারপন্থী (জেএসএস) সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক ২২ জন বম পাড়াবাসীকে অপহরণ করে। তবে পরে ১৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও ৭ জনকে এখনো ছেড়ে দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়-

গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার সময় নব্যমুখোশ ও সংস্কারপন্থী জেএসএস’র ২০-২৫ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী জুরভারং পাড়ায় প্রবেশ করে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে পাড়াবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে সন্ত্রাসীরা একে একে পাড়ার ২২ জন ধরে বেঁধে রাখে। সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী ও কলেজ পড়ুয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীও রেহাই পায়নি। এ সময় সন্ত্রাসীরা ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।
পরে সন্ত্রাসীরা উক্ত ২২ জনকে পায়ে হেঁটে খামতাং পাড়ায় নিয়ে গিয়ে সেখানে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্দি করে রাখে।
সর্বশেষ রাতে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে-
সন্ত্রাসীরা অপহৃত ২২ জনের মধ্য থেকে ১৫ জনকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে বাকী ৭ জনকে এখনো ছেড়ে দেওয়া হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
গত ৭ এপ্রিল শুক্রবার বান্দরবানের রুমা উপজেলার ১নং পাইন্দু ইউনিয়নের জুরভারাং পাড়া থেকে সেনা মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ-সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহৃত ৭ বম পাড়াবাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশ ৮ জনের লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে।
রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সংযোগ সড়কের মাঝামাঝি খামতাং পাড়া থেকে গুলিবিদ্ধ লাশগুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোয়াংছড়ি থানার ওসি আব্দুল মান্নান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ৮টি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
হত্যার শিকার হওয়া ৭ জনের নাম জানা গেছে, এরা হলেন-
১.ভান দু বম,
২. সাং খুম,
৩.সান ফির থাং বম,
৪. বয় রেম বম,
৫. জাহিম বম,
৬. লাল লিয়ান ঙাক বম ও
৭. লাল ঠা জার বম।
এর মধ্যে ৬ জন জুরভারাং পাড়ার ও ১ জন পানখিয়াং পাড়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
গত ৮ এপ্রিল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নের ২নং প্রকল্প গাছবান থেকে সেনাবাহিনী কর্তৃক ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রসহ ২ জনকে আটক করা হয়।
আটককৃরা হলেন-
১. টোকেলসা ত্রিপুরা (১৫), পিতা- কমল ত্রিপুরা, সে ২নং গাছবান নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ও
২. সুখেন্দু ত্রিপুরা (৩৬), পিতা- ধীরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, তিনি পেশায় একজন দোকানদার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়-
৮ এপ্রিল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার সময় এক নব্যমুখোশ দুর্বৃত্তকে সাথে নিয়ে খাগড়াছড়ি সদর জোন থেকে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য গাছবান এলাকায় গিয়ে ৯ম শ্রেণীর ছাত্র টোকেলসা ত্রিপুরা ও দোকানদার সুখেন্দু ত্রিপুরাকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়।
আটকের পর তাদের হাতে অস্ত্র ও চাঁদা আদায়ের রশিদ বই গুজে দিয়ে তাদেরকে খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয় বলে জানা গেছে।
৮ এপ্রিল শনিবারে ইউপিডিএফ সদস্য হ্লাচিং মং মারমা (ঊষা) ও ত্রিদিব চাকমা হত্যার বিচার দাবিতে রামগড়ে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রামগড় ইউনিটের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করা হয়েছে।

হাতে লেখা এসব পোস্টারে “হ্লাচিং মারমা হত্যার বিচার চাই, ত্রিদিব চাকমা হত্যার বিচার চাই, সন্ত্রাসীদের মদদদাতা সেনা গোয়েন্দাদের গ্রেফতার কর, ইউপিডিএফ’র উপর দমন পীড়ন বন্ধ কর, পাহাড় থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার কর, অবিলম্বে সেনা সন্ত্রাস বন্ধ কর, ঠ্যাঙারে দিয়ে সন্ত্রাস বন্ধ কর, পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ কর...” ইত্যাদি দাবি রয়েছে।
এদিকে, পোস্টারিংয়ের পর পরই বৈদ্য পাড়া বিজিবি ক্যাম্প হতে একদল বিজিবি সদস্য এসে বাজার চৌধুরী পাড়ায় লাগানো পোস্টারগুলো ছিঁড়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

গত ৮ এপ্রিল শনিবার বিকেলে ৪টার দিকে বান্দরবানে বম জনগোষ্ঠীর ওপর নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) খাগড়াছড়ি ইউনিট। “পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ কর, অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে খুনীদের সাজা দাও” শ্লোগানে খাগড়াছড়ি সদরের নারাঙহিয়ে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি জেলা পরিষদ হয়ে স্বনির্ভর বাজারে শহীদ অমর বিকাশ চকামা সড়কের উপর সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-
ইউপিডিএফ-এর সংগঠক বিপুল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি শান্ত চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা আহ্বায়ক এন্টি চাকমা।
বক্তারা বলেন-
বান্দরবানে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে নব্যমুখোশ-সংস্কারপন্থী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে বম জনগোষ্ঠির সাধারণ লোকজনকে অপহরণের পর ‘দু’পক্ষের গোলাগুলি’র নাটক সাজিয়ে ৮ জনকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। ‘কেএনএফ’ নামধারী একটি গোষ্ঠিকে দমনের নামে রাষ্ট্রীয় বাহিনী এই ঘৃণ্য অপকৌশল প্রয়োগ করে বম জনগোষ্ঠির লোকজনকে হত্যার মাধ্যমে জাতিগত সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে। এভাবে রাষ্ট্রীয় বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে।
বক্তারা উক্ত নারকীয় হত্যাকাণ্ডর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন-
সরকার ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার সুগভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বম জাতিগোষ্ঠির শত শত লোক ভারতের মিজোরামে আশ্রয় নেয়ার ঘটনা তাই প্রমাণ করে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসী ও তাদের মদদদাতাদের আইনের আ্ওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবি জানান।
৯ এপ্রিল রবিবার সকালে খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি উপজেলার ২৪ মাইল এলাকা থেকে সেনা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী কর্তৃক নান্যাচর উপজেলার জুয়েল চাকমাকে অপহরণ করা হয়।
জুয়েল চাকমার (২০) পরিচয়-
পিতা-নিশী কুমার চাকমা, গ্রাম- রাঙ্গী পাড়া, ৭নং ওয়ার্ড, নান্যাচর সদর ইউনিয়ন। তিনি পেশায় একজন ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক। মোটর সাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন।
ঘটনার প্রতক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়-

৯ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার সময় জুয়েল চাকমা তার মোটর সাইকেলটি নিয়ে মহালছড়ির ২৪ মাইলে (মহালছড়ি কলেজের সামনে) যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় প্রজিত, সুমন্ত চাকমার নেতৃত্বে সেনা মদদপুষ্ট্ একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এসে তাকে অপহরণ করে ব্রিজ পাড়ার দিকে নিয়ে যায়।

No comments

আপনার কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!

Latest Articles