বখাটে যুবকের ইভটিজিংয়ের বলি যশোরের হিন্দু মেয়ে অনি রায়



 গত ২৭ মার্চ সকাল ১০ টার দিকে যশোর-ঝিকরগাছা উপজেলার গৌতম রায়ের মেয়ে অনি রায় মোঃ সাকিবের উত্যক্তের শিকার হয়ে কোচিং শেষে বাড়িতে ফিরে ফ্যানের সঙ্গে মায়ের শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

এ ঘটনায় ২৮ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে ময়নাতদন্তের পর অনির মরদেহ নিয়ে ঝিকরগাছা মহাসড়ক অবরোধ করে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী ও অনির সহপাঠীরা। বিক্ষোভ মিছিলের ফলে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে ঝিকরগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত ঘটনাস্থলে এসে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে অবরোধকারীরা সড়ক ছেড়ে দেয়।
নিহত অনি রায় ঝিকরগাছা হাসপাতাল রোডের মিস্ত্রিপাড়ার কুয়েত প্রবাসী গৌতম রায়ের মেয়ে এবং বদরউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
নিহত অনি রায়ের পরিবারের দাবি ইভটিজিং-এর শিকার হয়ে অনি আত্মহত্যা করেছে। নিহতের ভাই অর্ঘ্য রায় (১৮) বলেন-
প্রতিদিনের মতো আমার বোন বিদ্যালয়ে কোচিংয়ের জন্য যায়। কোচিং থেকে বাসায় ফিরে কাউকে কিছু না বলেই নিজের ঘরে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। আমার বোন বিদ্যালয় থেকে ফেরার সময় পথে কিছু বখাটে তাকে উত্ত্যক্ত করে। আমার বোনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পরে আমার সঙ্গে তিন যুবকের কথা-কাটাকাটি হয়। তারা বলাবলি করছিল ‘ঘটনা ধামাচাপা দিতে দেখতে হবে অনি বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে।’
অর্ঘ্য রায়ের দাবি ওই তিন যুবকই তার বোন অনি রায়কে উত্ত্যক্ত করতো। তাদের মধ্যে একজন হাসপাতাল রোড এলাকার বাসিন্দা ও বদরউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সাকিব।
এদিকে বিদ্যালয়ের গেটের একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়-
ওই তিন যুবক স্কুলে ঢোকার ১০ মিনিট পরে নিহত অনি রায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বের হচ্ছে। অপর একটি ফুটেজে দেখা যায় অনি রায় কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির দিকে যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মোতাছিম বিল্লাহ প্রি-ক্যাডেট স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী বলে-
অনি অনেক জোরে দৌড়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল আর তিনটা ছেলে তার পিছু নিয়েছিল।
ঝিকরগাছা বদরউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ জানান-
অনি রায় খুবই ভালো মেয়ে ছিল, খেলাধুলার কারণে পরিচিত মুখ ছিল। কোচিং থেকে বাসায় ফিরে সে আত্মহত্যা করেছে। অনি রায়ের আত্মহত্যার জন্য দোষীদের শাস্তির দাবিতে আগামীকাল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মানববন্ধন করবে।
ঝিকরগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত জানান-
তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Post a Comment

আপনার কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!

Previous Post Next Post