ক রোনার দাপট কমতেই রাজ্যে এবার চোখ রাঙাচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস। এই ভাইরাসে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শহর থেকে জেলা, সরকারি থেকে বেসরকারি, কো...
করোনার দাপট কমতেই রাজ্যে এবার চোখ রাঙাচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস। এই ভাইরাসে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শহর থেকে জেলা, সরকারি থেকে বেসরকারি, কোথাও কোনও হাসপাতালের শিশু বিভাগের বেড খালি নেই। খালি নেই ভেন্টিলেটরও। রবিবার পর্যন্ত রাজ্যে ১১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে।
এই শিশুরা যে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল, সেটাও নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। কিন্তু চিকিত্সকদের দাবি, মরশুমি জ্বর-সর্দি নয়, অধিকাংশই শিশু অ্যাডিনোভাইরাসেই আক্রান্ত।
অ্যাডিনোভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয় ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথের প্রধান চিকিত্সক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাস প্রসূন গিরির সঙ্গে। তাঁর কথায়, “আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এখন যে সব বাচ্চারা জ্বর, সর্দিতে ভুগছে, তাদের অধিকাংশই অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত। এবং এই ভাইরাসের প্রভাব মারাত্মক।” সুতরাং, এই সময় সাবধান থাকতে হবে।
যেহেতু এখন আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে এবং ঘরে-ঘরে বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলেই জ্বর-সর্দিতে ভুগছে, তাহলে কীভাবে অ্যাডিনোভাইরাসে লক্ষণগুলো চিহ্নিত করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রভাসবাবু জানান, জ্বর, সর্দি, কাশি এগুলো রয়েছে। তার সঙ্গে গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে সমস্যা হলে দ্রুত চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বাচ্চার বয়স যত কম, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
করোনাভাইরাস খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি বাচ্চাদের উপর। কিন্তু কোভিড পরবর্তী সময়ে ঠিক ততটাই জোরাল হয়েছে অ্যাডিনোভাইরাসের প্রভাব। এই ভাইরাসের হানায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও। তবে এমন নয় যে এই অ্যাডিনোভাইরাস কোভিড পূর্ববর্তী সময়ে ছিল না। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সুমন পোদ্দার বলেছেন, "এটা বহু পুরনো ভাইরাস। করোনার আগেও এই ভাসরাসের বাড়ন্ত হয়। গত দু’সপ্তাহ ধরে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা খুব বেড়েছে। এই ভাইরাসে সকলে আক্রান্ত হয়, তবে শিশুদের মধ্যে বেশি।"
কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে শিশু ওয়ার্ডে প্রায় সমস্ত বেড ভর্তি। পরিস্থিতি সামাল দিতে নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু বাড়ির খুদেকে নিরাপদ রাখতে গেলে অভিভাবকদেরই সচেতন হতে হবে। এক্ষেত্রে কী-কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, এই প্রসঙ্গে ডাঃ গিরির পরামর্শ, বাড়িতে বড়দের কারও জ্বর-সর্দি হলে শিশুর থেকে দূরে থাকুন। জনবহুল এলাকা, ভিড় থেকে শিশুকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন। কোভিডকালের মতোই মুখে মাস্ক এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর আবারও জোর দেওয়া হচ্ছে। এই রোগ ছোঁয়াচে। সুতরাং, সাবধানতা অবলম্বন না করলে, বিপদ বাড়বেই।
No comments
আপনার কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!