টমেটোর নাম ব্ল্যাক বিউটি। নগরীর ঠাকুরপাড়া বাগানবাড়ী এলাকায় এ টমেটোর চাষ হচ্ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে কালো টমেটোর একটি হচ্ছে ব্ল্যাক বিউটি টমেটো। ...
টমেটোর নাম ব্ল্যাক বিউটি। নগরীর ঠাকুরপাড়া বাগানবাড়ী এলাকায় এ টমেটোর চাষ হচ্ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে কালো টমেটোর একটি হচ্ছে ব্ল্যাক বিউটি টমেটো। স্থানীয়দের কাছে যার নাম ‘কালো সুন্দরী’। কালোর সাথে হালকা সবুজ থাকাতে এ টমেটো দেখতে নান্দনিক মনে হয়। এটি পৃথিবীর বিরল প্রজাতির একটি সবজি।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে এখনো বাংলাদেশে এর চাষ শুরু হয়নি। কিন্তু কুমিল্লার সৌখিন কৃষক আহমেদ জামিল সেলিম এটি চাষ করে ফলন উৎপাদন করে সম্ভবত বাংলাদেশের প্রথম ব্ল্যাক বিউটি টমেটো উৎপাদনকারী হিসেবে নিজের নাম লিখতে সক্ষম হয়েছেন। নিজের বাড়ির উঠানে তিনি এ চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। প্রতিদিন এই বিরল প্রজাতির টমেটো দেখতে তার বাড়িতে লোকজন ভিড় করছে।
স্থানীয়দের কাছে যার নাম ‘কালো সুন্দরী’। যুগ যুগ ধরে দেখা সাধারণ টমেটোর সাথে এই কালো সুন্দরীর রঙ একেবারই অমিল। সুন্দরীও যে কালো হতে পারে তা দেখা যাবে কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়ার এই বাগানবাড়ী এলাকায়।
পেশায় ব্যবসায়ী জামিল ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনা থেকে আত্মীয়ের মাধ্যমে কালো টমেটোর বীজ আনান। পরের বছর প্রথম নিজের বাড়িতে টবে কালো টমেটো চাষ করেন। ফলনও পায় ভালো।
কৃষি গবেষকেরা বলছেন, এটি প্রচলিত টমেটোর চেয়ে বেশি মাংসল হয়। এই টমেটো গাছের উচ্চতাও বেশি। ফলন কেবল শীতকালে হয়। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কালো টমেটো বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায়। এই টমেটোর নানা রকম ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
কুমিল্লার কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, এই প্রজাতির টমেটোর চাষ দেশে প্রথম। এদেশে বিদেশি কোনো বউ এলে পাড়া ও পড়শীরা তাকে দেখতে ভীড় করে। এই কালো সুন্দরীকে দেখতে তেমনি ভীড় লেগে থাকে ওই বাড়িটিতে। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার বাসিন্দা আহমেদ জামিল সেলিম নিজ গ্রামে ধান, সবজি, মাছ চাষ করেন শখের বশে। সম্প্রতি তিনি বিভিন্ন দেশ থেকে নানা জাতের টমেটো বীজ সংগ্রহ করেছেন। সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক বিউটি, পর্ন চপ, টাইগার এলা এরর, অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা চেরী টমেটোর বীজ।
সৌখিন চাষী আহমেদ জামিল সেলিম বাসসকে বলেন, নতুন কোনো জাতের ধান বা শাক-সবজির খোঁজ পেলেই আমি তার সংগ্রহের চেষ্টা করি। ব্ল্যাক বিউটি টমেটোর বীজটিও তেমন। আত্মীয়ের কাছে এ জাতটি সম্পর্কে খোঁজ পেয়ে তা আমেরিকা থেকে নিয়ে এসেছি। চাষ করে সফলতাও পেয়েছি। অনেকেই এটি দেখার জন্য আমার বাড়ি ভীড় করছেন। এটা অনেক আনন্দের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক তারিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, এই জাতটি শীত প্রধান দেশের। আহমেদ জামিল সেলিমই এ দেশে প্রথম এর চাষ করলেন। তিনি আরো বলেন, ব্ল্যাক বিউটির গাছ সাধারণত টমেটোর গাছ থেকে অনেক বড় হয়। এটি কৃষক পর্যায়ে গেলে প্রতি গাছ থেকে ৮/১০ কেজি টমেটো পাওয়া যেতে পারে। আমরা এর বাণিজ্যিক চাষের চেষ্টা করবো। কুমিল্লার বেসরকারি কৃষি বিষয়ক সংগঠন আধুনিক কৃষিমনার প্রতিষ্ঠাতা কৃষিবিদ মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ব্ল্যাক বিউটি টমেটো অনেক সুন্দর। এটি অনেক স্বাদের। ভিতরে পানির অংশ কম থাকায় সংরক্ষণ করা যাবে। ব্যতিক্রমধর্মী রং হওয়ায় কৃষকরাও ভাল দাম পাবে আশা করা যায়।
No comments
আপনার কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!