আজ ১০ মার্চ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয় সংসদে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ৬০টি সংর...
আজ ১০ মার্চ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয় সংসদে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ৬০টি সংরক্ষিত আসন এবং পৃথক নির্বাচনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
সংগঠনটির নেতারা বলেছেন-
তাঁদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ভোট বর্জন করবে।
এসব দাবিতে আগামীকাল শনিবার সকালে দেশের সব জেলা ও উপজেলা সদরে সংগঠনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, এ সময় তিনি বলেন-
‘বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে। তবে স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যালঘু কমিশন চায় না, তথাকথিত সুরক্ষা আইন চায় না।
এসব আইন ও কমিশন হিন্দু সমাজের কোনো উপকারে আসবে না। হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষা ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠাই হিন্দু সম্প্রদায়ের একমাত্র দাবি। অন্য কোনো আইন হিন্দু সমাজ মেনে নেবে না।
বিভিন্ন সময় নির্যাতনসহ নানা কারণে দেশের হিন্দু সম্প্রদায় দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। ক্রমাগত দেশত্যাগের কারণে দেশে হিন্দুদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। অথচ সংখ্যালঘু সমস্যা সমাধানে জাতীয় সংসদ সর্বদাই নীরব ভূমিকা পালন করেছে।
বর্তমান সংসদে ১৬ জন হিন্দু সংসদ সদস্য রয়েছেন। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের সমস্যা সমাধানে তাঁদের কোনো ভূমিকা নেই। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করার মতো কোনো সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদে নেই। কারণ, তাঁরা দলের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে কথা বলতে পারেন না।
১৯০৯ সালে অবিভক্ত ভারতে মুসলিম সম্প্রদায় পৃথক নির্বাচনব্যবস্থা দাবি করেছিল। তাদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনে পৃথক নির্বাচনব্যবস্থা চালু করে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত এ ব্যবস্থা অব্যাহত ছিল। তখন প্রাদেশিক পরিষদে সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক নির্বাচনব্যবস্থার মাধ্যমে ৭২টি আসন সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে হিন্দু ৬৯ জন, বৌদ্ধ ২ জন ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ১ জন প্রতিনিধি সরাসরি নির্বাচিত হতে পারতেন।
ওই সময় নিজ নিজ ধর্মের মানুষদের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতেন। তাঁরা তাঁদের সম্প্রদায়ের মানুষদের কাছে দায়বদ্ধ থাকতেন। তাঁরা নিজ নিজ ধর্মের মানুষদের সমস্যা জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরে সমাধান করতে পারতেন। পাকিস্তানি শাসকেরা তাঁদের সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী মানসিকতা বাস্তবায়নে সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসন ব্যবস্থা সুকৌশলে তুলে নেন। দুর্ভাগ্যের বিষয়, দেশ স্বাধীন হলেও এখনো সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।
No comments
আপনার কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!